Thursday , 28 September 2023

Home » রাজনীতি » ‘আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান’ সংবিধানেই সীমাবদ্ধ

‘আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান’ সংবিধানেই সীমাবদ্ধ

January 30, 2017 10:06 am by: Category: রাজনীতি, শীর্ষ খবর Leave a comment A+ / A-

সংবিধানে বলা আছে আইনের দৃষ্টি সবাই সমান এবং সকলে আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। এটি সংবিধানেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এটা আমাদের অপরাগতা। প্রকৃতপক্ষে দুস্থরা বিচার পাচ্ছে না।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এসব কথা বলেন।
২৬ জানুয়ারি গাজীপুরের কিশোর ও কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সেখানে শুধু গরিবেরা নয়, ধনাঢ্য পরিবারের ছেলেমেয়েরাও ষড়যন্ত্রের কারণে আছে। সেখানে আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থারও একটু বাড়াবাড়ি হচ্ছে। দেখলাম, কেউ কেউ আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার পরীক্ষার্থী, তাদের যেন জামিনের ব্যবস্থা করা হয় সেজন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছি। সেখানেও আইন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিশোর-কিশোরীরা ধনাঢ্য ব্যক্তি, আবার প্রভাবশালীর চাপে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্য অপরাধীদের সঙ্গে খারাপ অবস্থায় আছে।’
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইউসূফ হোসেন হুমায়ুন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন যৌথভাবে সুপ্রিমকোর্ট মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন কমিটির সদস্যসচিব টাইটাস হিল্লোল রেমা।
জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা ও লিগ্যাল এইড কমিটি অসহায়, অসচ্ছল ও সুবিধাবঞ্চিতদের সরকারি অর্থে আইনি সহায়তা দিয়ে থাকে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ২০০০ সালে জাতীয় আইনগত সহায়তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এর আগেও ব্রিটিশ আমলেও কিন্তু এ সহায়তা দেয়া হতো। প্রত্যেক জেলায় প্রখ্যাত-বিখ্যাত আইনজীবীরা ফৌজদারি মামলায় এপিপি হিসেবে নিয়োগ পেতেন। এটা সম্মানের পদ ছিল।
তিনি বলেন, যেসব খুনের মামলার আসামিরা আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারতেন না জেলা প্রশাসক ওই বিখ্যাত আইনজীবীকে অনুরোধ করতেন বিনা পয়সায় মামলাটা পরিচালনা করার জন্য। এই নীতি বেশ কিছু সময় চলার পর এখন আর দেখা যাচ্ছে না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এখন এপিপি বলতে যেকোনো সরকারি দল, যে-ই থাকে, তাদের একটি প্যানেল লিস্ট করা হয়। এর বাইরে নিয়োগ দেয়া হয় না।
প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, আগে কিন্তু সারা দেশে বিখ্যাত আইনজীবীদের চার-পাঁচজনের প্যানেল থাকতো। সঠিকভাবে বিরোধিতা করার জন্য তাদের নিয়োগ দেয়া হয়।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, বলেন, আইনজীবীদের সমালোচনা করছি না। একটা নৈতিকতার প্রশ্ন জড়িত। আমরা ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছি। ঐতিহ্য হারিয়ে না ফেললে আরও ভালোভাবে আইনগত সহায়তা দেয়া সম্ভব হতো।
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার প্যানেল আইনজীবীরা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় কতটুকু সহায়তা করছে সে প্রশ্ন তুলে প্রধান বিচারপতি বলেন, প্যানেল আইনজীবী হিসেবে যদি খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বা হাসান আরিফকে বলি, তাহলে একটু মুচবি হেসে তারা উত্তরই দেবেন না। এতে হয় কী, তখন মামলা পরিচালনায় ভারসাম্য থাকে না।
তিনি বলেন, কাউকে খাটো করার জন্য বলছি না। এক পক্ষে প্রথিতযশা ও অভিজ্ঞরা থাকেন; অন্যপক্ষে মোটামুটি প্রখ্যাত না, অনভিজ্ঞরা থাকেন। এক্ষেত্রে খাপ খায় না। এর ফলে সরকারি তহবিল থেকে টাকা চলে যাচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে দুস্থরা বিচার পাচ্ছে না।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমার একার পক্ষে সারা দেশে পরিবর্তন সমাধান সম্ভব নয়। প্রত্যেকেরই সহযোগিতা দরকার। যারা আইনগত সহায়তা দেন বা প্যানেল আইনজীবী তাদের প্রশিক্ষণ দরকার। এজন্য তিনি আইনের কারিগরি বিষয় যেমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং মৃত্যুর পূর্বে ব্যক্তির জবানবন্দি ইত্যাদি বিষয়ে লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ব্যক্তিগতভাবে একটি তহবিল গঠন করার কথা জানান। সেই তহবিল থেকে যেসব মামলায় প্রখ্যাত আইনজীবী আছেন, তাদের বিপরীতে দুস্থ-অসহায়রে মামলা লড়ার জন্য অন্য প্রখ্যাত আইনজীবী নিয়োগে অর্থ দেয়া হবে।

‘আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান’ সংবিধানেই সীমাবদ্ধ Reviewed by on . সংবিধানে বলা আছে আইনের দৃষ্টি সবাই সমান এবং সকলে আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। এটি সংবিধানেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এটা আমাদের অপরাগত সংবিধানে বলা আছে আইনের দৃষ্টি সবাই সমান এবং সকলে আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। এটি সংবিধানেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এটা আমাদের অপরাগত Rating: 0

Leave a Comment

scroll to top