শীতকাল এলেই চারিদিকে বিয়ের ধুম পড়ে যায়। সবার ধারণা শীতকালে বিয়ে হলে নাকি মনের খুশি মত সাজা যায় এবং যা খুশি খাওয়া যায়! ফলে অসুস্থ হওয়ার ভয় থাকে খুব সীমিত। তাই শীতকালকেই বিয়ের উপযুক্ত মাস ধরে বিয়ের পিঁড়িতে বসে যান অনেকেই।
কিন্তু যে মাসেই বিয়ে হোক না কেন জীবনে একবারই বিয়ে করার সাধ থাকে মানুষের। আর ধুমধাম করে বিয়ে করা মানেই তো অনেক টাকার ব্যয়। কিন্তু ধুমধাম করে না করলেও আবার আত্মীয়-স্বজনের মুখ হয়ে যাবে কালো মেঘের মতো ভার।
আবার মেয়ের বাবার ক্ষেত্রে পাত্র পক্ষের সমস্ত দাবি দাওয়া মেনে তারপরে মেয়ের বিয়ে দিতে হয় ধুমধাম করে। কিন্তু ভাবুন তো একবার, ছেলে বা মেয়ের বিয়েতে টাকা খরচ হল অনেক কম কিন্তু বিয়ে হল যথারীতি ধুমধাম করে- এমনটা হলে কেমন হবে?
কাজের তালিকা তৈরি করুন :
বিয়ের সব কাজ করার আগে একটি তালিকা তৈরি করে রাখুন। অবশ্যই বাড়ির সকলের উপস্থিতিতেই তৈরি করবেন তালিকাটি। এতে আপনি ভুলে গেলেও অন্য কেউ মনে করিয়ে দেবে আপনাকে। এরপর আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী সব খাতে খরচ করুন। দেখবেন তাতে খরচ অনেক কম হবে। তারপর যদি সেখান থেকে কিছু খরচ কমে যায় তাহলে তো একেবারে সোনায় সোহাগা।
বিয়ের গয়না :
বিয়ের গয়না একটা বড় খরচ। তাই সম্ভব হলে আগে থেকেই গয়না একটু একটু করে কিনে রাখুন। তাহলে দেখবেন খুব বেশি গায়ে লাগবে না।
অতিথি নিমন্ত্রণে যাচাই-বাছাই :
আমাদের এমন অনেক আত্মীয় বা বন্ধু আছেন যারা সারা বছর আমাদের সুখে দুঃখে না থেকেও অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পাওয়ার জন্য বসে থাকেন। ভেবে দেখুন তারা যদি আমাদের দরকারের সময় না থাকেন তাহলে আমাদের ভালো সময় তাদের উপস্থিতির কি খুব দরকার আছে? যদি না থাকে তাহলে তাদেরকে নিমন্ত্রণ করা ছেড়ে দিন। তাই নিমন্ত্রণের ক্ষেত্রে কিছু যাচাই-বাছাই করলে বরং লাভ হবে আপনারই।
কাগুজে কার্ডের বদলে ই-কার্ড ব্যবহার:
বিয়ে মানেই হল ট্রাডিশনাল অনুষ্ঠান। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের মানেই যে সব সময় পুরনো ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে আমাদের বাঁচতে হবে তার কথা কোথাও উল্লেখ নেই। এখন ইমেল সকলেই ব্যবহার করেন। তাই কার্ডের জন্য খরচ না করে সুন্দর করে ই-কার্ড বানিয়ে পাঠিয়ে দিতে পারেন আত্মীয় এবং বন্ধুদের কাছে। তাহলে কার্ডের খরচের সঙ্গে বেঁচে যাবে।সঙ্গে নিমন্ত্রণের যাতায়াত খরচও। প্রথমে হয়ত কেউ এই ধরনের নিমন্ত্রণকে বাজে বলবেন, কিন্তু পরে দেখবেন হয়ত তিনিও এই পদ্ধতি অবলম্বন করছেন।
স্থান ঠিক করা :
বিয়ে কোথায় হবে সেই স্থানটিকে বেছে নেওয়াটাও একটা বড় ব্যাপার। যদি আপনার বাড়ি অনেক বড় থাকে তাহলে অন্য কোথাও বিয়ে বাড়ি ভাড়া না করে নিজের বাড়িকেই সুন্দরভাবে সাজিয়ে অনুষ্ঠান সেরে নিতে পারেন। যদি আপনার বাড়ি নাও থাকে তাহলে এমন কোনও ভাড়া বাড়ি করুন যেখানে খরচ অনেক কম কিন্তু সেটা যেন আপনার বাড়ি থেকে খুব দূরে না হয়। দূরে হলে গাড়ি খরচ বেড়ে যেতে পারে। সেটাও একটা বাজে খরচ হয়ে যাবে।
ড্রেস না কিনে বানিয়ে নিন :
সকলেরই ডিজাইন করা ড্রেসের প্রতি একটা লোভ থাকে। কিন্তু ভাবুন তো এই ড্রেসের পিছনে কত টাকা খরচ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু জানেন কি আপনি নিজেও বানিয়ে নিতে পারেন এই ডিজাইন করা ড্রেস? আপনার আশেপাশে এমন অনেক দোকান আছে যেখান থেকে আপনি সহজেই কম দামে ড্রেস বানাতে পারেন। এমনকি নেট থেকে ড্রেসের কনসেপ্ট নিয়ে ম্যাটেরিয়ালস কিনে দর্জির কাছ থেকে বানিয়ে নিতে পারে।
অফারের সময় জামা কাপড় কিনে রাখুন :
বিয়ের আগেই যে সমস্ত জামাকাপড় কিনতে হবে তা কখনোই ঠিক নয়। তাই বিয়ের আগে যদি দোকানগুলোতে মূল্য হ্রাসের কোন অফার চলে তাহলে সেই সময় কিছু জামা কাপড় কিনে রাখতে পারেন। তাহলে দেখবেন জিনিস ভালোও হবে আর আপনার খরচও কমে যাবে।
সবাইকে বিয়ের কাজে সাহায্য করতে দিন :
আত্মীয়দের সকলকেই বিয়ের কাজে নিযুক্ত করুন। তাহলে দেখবেন অনেকটা খরচ কমে যাবে এবং কাজও হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি।
অন্যের ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন না :
খরচ কমাতে হবে বলে অন্যের ওপর কখনোই চাপ সৃষ্টি করবেন না। এতে কাজ বিগড়ে যেতে পারে। তাই খুব ঠান্ডা মাথায় সকলের সঙ্গে কথা বলে তারপরেই সিদ্ধান্ত নিন। যিনি বিয়ে করছেন তার মত নেওয়াটাও সব থেকে জরুরি। সকলের মধ্যে কাজ ভাগ করে দিতে পারেন।
– See more at: http://primenewsbd.com/index.php?page=details&nc=22&news_id=72802#sthash.91mSJTX5.dpuf